দলিলের নকল উত্তোলন এবং সূচিবহি তল্লাশ ও পরিদর্শনের নিয়মাবলীঃ
রেজিস্ট্রেশন আইন ১৯০৮ এর ৫৭(১) ধারা মোতাবেক, প্রয়োজনীয় ফিস পূর্বে পরিশোধ সাপেক্ষে, যে কোন ব্যক্তি ১ নং (স্থাবর সম্পত্তি সংক্রান্ত দলিলের) ও ২ নং (রেজিস্ট্রি করতে অস্বীকার করা দলিলের) রেজিস্টার বহি ও ১ নং রেজিস্টার বহি সম্পর্কিত সূচিবহি পরিদর্শন করতে পারে এবং উক্ত আইনের ৬২ ধারার বিধানাবলি সাপেক্ষে উক্ত বহিসমুহে লিপিবদ্ধ বিষয়ের নকল (অর্থাৎ দলিলের সার্টিফাইড কপি) গ্রহন করতে পারে।
একই আইনের ৫৭(২) ধারা মোতাবেক, প্রয়োজনীয় ফিস পূর্বে পরিশোধ সাপেক্ষে, দলিল সম্পাদনকারী বা তার এজেন্ট এবং সম্পাদনকারীর মৃত্যুর পর (পূর্বে নয়) যে কোন আবেদনকারী ৩ নং বহি (নিবন্ধিত উইলের রেজিস্টার বহি) তে লিপিবদ্ধ বিষয়ের (অর্থাৎ উইল বা অছিয়ত দলিলের নকল বা সার্টিফাইড কপি) এবং ৩ নং বহি সম্পর্কিত সূচিপত্রের নকল গ্রহন করতে পারে।
একই আইনের ৫৭(৩) ধারা মতে, প্রয়োজনীয় ফিস পূর্বে পরিশোধ সাপেক্ষে, দলিলের সম্পাদনকারী বা দাবীদার ব্যক্তি বা তার এজেন্ট অথবা প্রতিনিধি ৪ নং বহিতে লিপিবদ্ধ বিষয়ের নকল গ্রহন করতে পারে।
একই আইনের ৫৭(৪) ধারা মতে, ৩ নং ও ৪ নং বহিতে লিখিত বিষয়ের তল্লাশি, সাব-রেজিস্ট্রার এর মাধ্যমে করা যাবে।
কিভাবে তল্লাশ করবেনঃ
যদি মূল দলিল থাকে- রেজিস্ট্রি অফিসে দলিলের রেজিস্ট্রি কার্যক্রম শেষ হলে মূল দলিলের শেষ পৃষ্টার উল্টোদিকে “দলিলটি কত সালের, কত নম্বর বালাম বইয়ের, কত পৃষ্ঠা থেকে কত পৃষ্ঠায় নকল করা হয়েছে” তা লিখে সাব-রেজিস্ট্রার কর্তৃক স্বাক্ষর করা হয়। এটা থেকে সহজেই রেজিস্ট্রি অফিসে থেকে দলিলের নকল উঠানো যায়।
মূল দলিল না থাকলে- রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল রেজিস্ট্রি শেষ হলে দলিলের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি তথ্য নিয়ে সূচিবহি তৈরি করা হয়। একটি সূচিবহি তৈরি হয় দলিলে উল্লিখিত জমির দাতা/বিক্রেতা, গ্রহিতা/ক্রেতা বা অন্য কোন পক্ষের নাম দিয়ে, আর একটি তৈরি হয় জমির মৌজার নাম দিয়ে।
দলিলের নকল প্রাপ্তির আবেদনের নিয়মাবলিঃ
রেজিস্ট্রেশন বিধিমালা ২০১৪ এর ১০৮ অনুচ্ছেদে সূচিবহি তল্লাশ ও দলিলের নকলের জন্য আবেদনের নিয়মাবলী লিপিবদ্ধ আছে। এ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, যে সকল ক্ষেত্রে তল্লাশ ও পরিদর্শনের জন্য কোন ফিস পরিশোধযোগ্য নহে, সে সকল ক্ষেত্র ব্যতিত, সকল ক্ষেত্রে নকলের জন্য আবেদন দাখিল করিবার পূর্বে (৩৬ নং ফরম অনুযায়ী) তল্লাশ ও পরিদর্শনের জন্য আবেদন করিতে হইবে। এরপর ৩৭ নং ফরমে নকলের জন্য আবেদন করিতে হইবে।
দফা ‘জি (এ)’ অনুসারেঃ কোন হেতু, ভুক্তি বা দলিলের নকল প্রস্তুতকরণ বা প্রদানের ক্ষেত্রেঃ
(অ) বাংলায় লিখিত প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা তার অংশ বিশেষের জন্য- ১৬ টাকা।
(আ) ইংরেজি ভাষায় লিখিত প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা তার অংশ বিশেষের জন্য- ২৪ টাকা।
দফা ‘জি (বি)’: কোন আবেদনকারী, কার্যালয়ের অন্যান্য নকলের কাজ অপেক্ষা, তাহার প্রার্থিত নকলের জন্য অগ্রাধিকার চাইলে, তাহাকে অতিরিক্ত ৫০ টাকা দিতে হইবে, বা যদি নকলটি প্রতি পৃষ্টায় ৩০০ শব্দ-বিশিষ্ট চার পৃষ্টার অধিক হয়, তাহলে প্রতি পৃষ্টার জন্য ১৫ টাকা হারে অতিরিক্ত ফি দিতে হবে।
দফা ‘জিজি’: কোন ভুক্তি বা দলিলের নকল প্রস্তুতকরণ বা প্রদানের ক্ষেত্রে ‘জি (এ)’ তে উল্লিখিত ফি ব্যতিত নকলনবিশগণের পারিশ্রমিক বাবদ নিম্নবর্ণিত হারে অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করিতে হইবে, যথাঃ
(অ) বাংলায় লিখিত প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা তার অংশ বিশেষের জন্য- ২৪ টাকা।
(আ) ইংরেজি ভাষায় লিখিত প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা তার অংশ বিশেষের জন্য- ৩৬ টাকা।
বিঃদ্রঃ ১। উল্লিখিত ফি রেজিস্ট্রি অফিসে নগদে পরিশোধ করতে হবে।
২। যদি কোন আবেদনকারী ইতোমধ্যে নিবন্ধিত কোন দলিলের মুদ্রিত বা টাইপকৃত নকল দাখিল করিয়া উহাকে “অবিকল নকল” মর্মে প্রত্যয়নযুক্ত রূপে পাইবার জন্য আবেদন করে, তাহলে এরূপ নকলের তুলনা করার জন্য ফিস ও পারিশ্রমিকের দফা ‘জি’ ও ‘জিজি’ অনুসারে ধার্যযোগ্য ফিস ও পারিশ্রমিকের অর্ধেক হইবে।
৩। ফিস প্রদান হইতে রেহাইপ্রাপ্ত নকল ব্যতিত অন্যান্য সকল নকলের আবেদনপত্রে কোর্ট ফি আইন, ১৮৭০ অনুসারে, ২০ টাকার কোর্টফি লাগাতে হবে।